মরুভূমির একপাশে মৃত বিছের মত পড়ে আছে।
৮০০কিলোমিটার দীর্ঘ শরীর প্রায় ১২টি টুকরো নিয়ে তৈরি। প্রতিটি টুকরোর মাঝে প্রায়-সমতল বনভূমি, নদী, চিতা, হরিণ, বুনো শুয়োরের অবাধ বিচরণ। এই ফাঁক দিয়েই যাতায়াত করত তুর্কি, মোগল, পাঠান, রানাপ্রতাপ। দরজার মতো।
তবে যতবারই মরুভূমি বাড়তে চেয়েছে, মরুধূলি উড়তে উড়তে আটকে গেছে বিছের গায়ে কিম্বা নিবিড় অরণ্যে। ধূলোর জন্য দরজা খোলা নেই। বিছের ভরসায় তৈরি হয়েছে দিল্লি, আগ্রা, গুরগাঁও, ফরিদাবাদ শহরগুলি । নইলে মরুভূমি কবেই খেয়ে ফেলত ওদের।
আরাবল্লীর সেই অরণ্য গত তিরিশ বছরে ধীরে ধীরে সাফ।এখন নজর পড়েছে পাহাড়ের ওপর। একশোর ওপর ছোটো খাটো চূড়ো আর নেই। তিরিশ বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টে বিভিন্ন মামলা ঝুলছে। কোর্টের রায় বার বার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। সুপ্রিমকোর্টকে ফাঁকি দিতে রাজ্য সরকারি ঘোষণা- ৩৩০ ফুটের কম উচ্চতাকে পাহাড়ের তকমা দেওয়া হবেনা এবং ওগুলি গুঁড়িয়ে ফেলায় কোনো বাধা নেই।
নাও, আবার তোলো তামা, আবার পাহাড় গুঁড়ো করে বাড়ির মেঝে বানাও। মাকরানা, নিজারানা, আঁধি - কত বাহারি নাম। আমাদের বাড়ির সিঁড়ি, টয়লেট, মেঝেতে খুবই মসৃণ ভাবে জমা হচ্ছে ধ্বংসের আর্তনাদ। এদিকে এর ফলে রীতিমতো থ্রেটের মুখে দিল্লি, আগ্রা সহ উত্তরপ্রদেশের গাঙ্গেয় সমভুমি।
আসলে এখন আর চাহিদা উৎপাদনকে নিয়ন্ত্রন করেনা। উৎপাদনের সাথে পাল্লা দিতে চাহিদা তৈরি করা হয়। তাই প্রোডাকশন প্রোডাকশন প্রোডাকশন। ঠিক তার পিছনে পিছনে ওয়েস্টেজ ওয়েস্টেজ ওয়েস্টেজ।
বইতে লেখা থাকে "সাস্টেনেবল ডেভেলপমেণ্ট"। কিন্তু সাস্টেনেবল ডেভেলপমেণ্ট বলে কিছু হয় কি?
পুরোটাই তো ঢপের চপ।
এক এবং একমাত্র উপায় ‘স্টপ ডেভেলপমেণ্ট’ ।

0 Comments