আসামে বাঙালী নিধন
পাব্লিক রিপোর্টার : বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আসামের তিনসুকিয়া জেলার ব্রহ্মপুত্রের ধোলা-সাদিয়া সেতুর কাছাকাছি খেরবেরি এলাকায় অজ্ঞাত পরিচয় বন্দুকধারীরা অন্তত পাঁচজন মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে।
পুলিশ এই হামলার পেছনে উলফা জঙ্গিদের জড়িত থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
গত ১৩ই অক্টোবর ফেন্সি বাজারে ব্রহ্মপুত্রের তীরে উলফা একটি কম তীব্রতা বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত ছিল, ওই বিস্ফোরণে কমপক্ষে পাঁচ জন আহত হয়েছিলেন।
দিন কয়েক আগেই অসমে শানের বাংলা গান গাওয়ায় যে বাঙালি বিদ্বেষ প্রতিফলিত হয়েছিল, এবারে তা আরও ভয়ানক আকার ধারণ করল বলে অনেকে মনে করছেন। কারণ যে পাঁচজন এই ঘটনায় নিহত হয়েছেন তাঁরা সকলেই বাঙালী। মৃতরা সকলেই বাঙালি বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের নাম শ্যামল বিশ্বাস, অনন্ত বিশ্বাস, অবিনাশ বিশ্বাস, সুবোধ বিশ্বাস ও ধনঞ্জয় নমশূদ্র।
নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বর্তমান বিতর্কের কারণে বাঙালিদের টার্গেট করা হচ্ছে মনে করছেন অনেকে।
ঘটনাটি ঘটে আপার আসাম এর তিনসুকিয়া শহর থেকে প্রায় 30 কিমি দূরে। জানা গিয়েছে, অসমের তিনসুকিয়া জেলার সাদিয়ায় একটি দোকানে বসেছিলেন ৬ যুবক। তখনই সেনার পোশাকে সেখানে হাজির হয় কয়েকজন বন্দুকবাজ। এরপর যুবকদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রহ্মপুত্র নদীর চড়ে। সংবাদটিতে বলা হয় যে সশস্ত্র পুরুষদের একটি দল ভিক্টিমদের প্রথমে লাইন আপ করতে বলে এবং তারপর খুব নিকট থেকে তাদের গুলি করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৫ জনের। গুরুতর আহত ২ জনকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। পরে তাঁদের মধ্যে আর একজনের মৃত্যু হয়। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান যে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন মারা গেছেন এবং আহতদের গুরুতর অবস্থায় তিনসুকিয়া সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা হত্যাকারীদের পরিচয় সনাক্ত করার চেষ্টা করছি , এই হামলায় পুলিশের সন্দেহ উলফার জঙ্গিদের উপর রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী সার্ববানন্দ সোনাওয়াল এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন এবং রাষ্ট্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রী কেশব মহান্ত ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী তপন গোগোয়কে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার নির্দেশ দেন।
পুলিস ও সেনা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়ে গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন এই মারাত্মক সহিংসতার অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা এমন কদর্য কাজ কখনোই সহ্য করবো না।
বেছে বেছে বাঙালি যুবকদের হত্যার ঘটনায় নাগরিকপঞ্জির সঙ্গে যোগ রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

0 Comments